ফেঞ্চুগঞ্জে টাকার গাছ

ফেঞ্চুগঞ্জে টাকার গাছ


ফেঞ্চুগঞ্জে টাকার গাছ


ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মাল্টা একটি সুস্বাদু ফল। স্বাদ ও গন্ধ অতুলনীয়। তাই আমাদের দেশে মাল্টা অন্যতম জনপ্রিয় ফল। কিন্তু চাহিদার পুরোটাই আমদানী নির্ভর। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, প্রত্যেক মানুষের দৈনিক কমপক্ষে ৮৫ গ্রাম ফল খাওয়া প্রয়োজন কিন্তু আমদের মাথাপিছু দৈনিক প্রাপ্তি ৬৫ গ্রাম।



বাংলাদেশে ফল চাষে মাল্টা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। যার ফলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে ফল আমদানীতে যে বিপুল পরিমাণ টাকার প্রয়োজন হয়, তার সাশ্রয় হবে। আশার কথা হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট বারি মাল্টা-১ জাত কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করছে। এই জাতটি বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পঞ্চগরসহ দেশের সব অঞ্চলের জন্য উপযোগি। সঠিক পরিচর্যা ও যথাযথ ব্যাবস্থাপনায় এই জাতটির প্রতিটি গাছে ২০০-৩০০ টি মাল্টা ধরতে পারে। প্রতিটি মাল্টার দাম যদি ২০ টাকা ও হয়, তাহলে একটি গাছ থেকেই একজন কৃষক এক মৌসুমে ৪০০০-৬০০০ টাকা আয় করতে পারে। সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় কৃষকদের মাঝে মাল্টা চাষের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা উপজেলা কৃষি অফিস এই গাছটিকে টাকার গাছ বলে কৃষকদের মাঝে পরিচিত করে যাচ্ছিযার ফলে ইতোমধ্যে এলাকার কৃষকেরা মাল্টা বাগান করা আরম্ভ করেছে। সকল প্রকার প্রশিক্ষণে আমরা মাল্টার চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের ধারনা দিচ্ছি। সারা দিন রোদ পড়ে এবং বৃষ্টির পানি জমে না এমন উঁচু বা মাঝারি উঁচু জমি মাল্টা চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচিত জমিটি কয়েকবার চাষ ও মই দিয়ে সমান করে নিতে হবে। জমি থেকে আগাছা পরিষ্কার করে আশপাশে উঁচু গাছ থাকলে কেটে ফেলতে হবে। সমতল ভূমিতে বর্গাকার বা ষড়ভূজি পদ্ধতিতে চারা রোপণ করতে হবে। সাধারণত মধ্য বৈশাখ থেকে মধ্য ভাদ্র (মে-আগস্ট) মাসের মধ্যে মাল্টার চারা রোপণের উপযুক্ত সময়।


তবে পানির সেচ নিশ্চিত করা গেলে চারা বছরের যেকোনো সময় লাগানো যায়।
চারা রোপণের জন্য গর্তের আকার ৭৫ সেন্টিমিটার বাই ৭৫ সেন্টিমিটার হবে। একটি চারা থেকে অন্যটির দূরত্ব হবে চার মিটার। তবে তিন মিটার দূরত্বেও চারা লাগানো যেতে পারে। গর্তের মধ্যে ১৫ কেজি গোবর বা কম্পোস্ট সার দিয়ে তিন থেকে পাঁচ কেজি ছাই, ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি সার ও ২৫০ গ্রাম চুন ওপরের মাটির সঙ্গে মেশাতে হবে। গর্তগুলো ১৫-২০ দিন ভরাট করে রেখে তারপর চারা লাগাতে হবে। ইতোমধ্যে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় বেশকিছু মাল্টার বাগান স্থাপিত হয়েছে। আমরা আশাবাদি এই টাকার গাছ গুলুতে একদিন টাকা ধরবে, কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে।